N I R O G

Organization

নীরোগ - সুস্থতা ও সুখের সেতুবন্ধ

নীরোগ কী?

‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ কী কেন?

মানবকল্যাণে ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ অলাভজনক একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’। গরীব, অসহায় রোগাক্রান্ত শিশু/ব্যক্তি এবং দাতার (ডোনার) মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরির মাধ্যম এটি। আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা নানাবিধ দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত, অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। সামর্থ্যবান, যাঁরা ওইসব অসহায় রোগীর পাশে দাঁড়াতে চান, আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে চান, ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ তাদের দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

 

সাহায্যপ্রার্থীর আবেদন প্রক্রিয়া
অর্থের অভাবে যারা চিকিৎসা করাতে পারছেন না, তাঁরা ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য রোগীর নিজের অথবা রোগীর পক্ষে আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, (শিশুদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন কার্ড এবং বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র), রোগের ধরন ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র, রোগীর ছবি বা ভিডিও বার্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সুপারিশপত্র এবং অর্থ গ্রহণের জন্য ব্যাংকের তথ্য অথবা বিকাশ/নগদ/রকেট ইত্যাদির তথ্য সংযুক্ত করে রেজিস্ট্রেশন করবেন।

 

আবেদন যাচাই প্রক্রিয়া
১. রেজিস্ট্রেশন জমা হওয়ার পর ‘নীরোগ’ টিম সব কাগজপত্র ও তথ্য প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করবে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
২. ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’-এর স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিধি রোগীর/রোগীর স্বজনের পাঠানো তথ্য সরাসরি স্থায়ী ঠিকানায় গিয়ে যাচাই করবে।
৩. ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’-এর চিকিৎসক উপদেষ্টাগণ আবেদনকারীর রোগের ধরন ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেওয়ার পর রোগীর প্রোফাইল ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রচারণা চালাবে।

 

দাতারা (ডোনার) কীভাবে সাহায্য করবেন?
১. আবেদনকারীর জীবনবৃত্তান্তের পাশাপাশি রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত থাকবে। আগ্রহী সন্মানিত দাতারা ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে আবেদনকৃত সব রোগীর প্রোফাইল দেখতে পাবেন।
২. ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দাতারা সরাসরি রোগী অথবা রোগীর পরিবারের সদস্য/স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচাই-বাছাই শেষে সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো আবেদনকারীর প্রোফাইলে দেওয়া বিকাশ/নগদ/ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আর্থিক সাহায্য করতে পারবেন।

রোগী/পক্ষে আবেদনকারীর দায়িত্ব
১. আবেদনকারী কত টাকা সাহায্য পেয়েছেন তা সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ ওয়েবসাইটে আপডেট করতে নীরোগ টিমকে জানাতে হবে। যথাযথভাবে আপডেট না করলে প্রোফাইল বাদ দেওয়া হবে।
২. রোগীর চিকিৎসা শেষ হলে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্য বা স্বজনকর্তৃক প্রোফাইলে সেই তথ্য আপডেট করতে নীরোগ টিমকে জানাতে হবে।

 

স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে কীভাবে?
প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’-এর স্বেচ্ছাসেবক-প্রতিনিধি রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং বিকাশ/নগদ/ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাওয়া আর্থিক অনুদানের বিবরণী (স্টেটমেন্ট) যাচাই-বাছাই করবে। রোগীর প্রোফাইলে দেওয়া কোনো তথ্য ভুল/অসত্য প্রমাণিত হলে আবেদনকারীর প্রোফাইল বাদ দেওয়ার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সতর্কতা/প্রতারক থেকে সাবধান!
আবেদনকারী এবং অনুদান দাতা-উভয়কেই প্রতারক থেকে সাবধান থাকতে হবে। প্রতারক চিনবেন যেভাবে-
১. প্রতারক আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথমে খোঁজ-খবর নেবে; আপনি ওমুক সরকারি/বেসরকারি সংস্থা থেকে একটি আর্থিক ফান্ড পেয়েছেন, এ জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, কিছু ফি লাগবে ইত্যাদি বলবে।
২. কেউ বলতে পারে, ভুল করে আপনার বিকাশ/নগদ/ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গেছে, ফেরত দিন।
৩. চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা পাঠাব, আপনার বিকাশ/নগদ অ্যাকাউন্টের পিন বলুন ইত্যাদি।

 

দৃষ্টি আকর্ষণ…
দাতা এবং আবেদনকারীর মধ্যে আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ সরাসরি কোনো অর্থ সংগ্রহ বা সরবারহ করবে না। আবেদনকারী রোগী/স্বজন এবং দাতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে মহৎ ও মানবিক কাজে অংশ নেওয়াই ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’-এর উদ্দেশ্য।

 

যাত্রা শুরুর গল্প এবং বর্তমান কার্যক্রম

জন্ম নিবন্ধন/এনআইডি কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে এমন একটি অ্যাপ ও সফটওয়্যার তৈরি করা হবে, যেখানে জীবনবৃত্তান্তের পাশাপাশি একজন ব্যক্তির সব বয়সের সব রোগের ইতিহাস (হিস্টোরি) জমা থাকবে এবং সেটা ক্রমান্বয়ে আপডেট হতে থাকবে। হিস্টোরি জমা থাকলে রোগীর রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি সহজ ও তুলনামূলক সঠিক হবে।

 

-এরকম একটি ভাবনা নিয়ে ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর ‘নীরোগ অ্যাপ’ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কাজ শুরু করা হয়। যদিও নানান সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকল্পটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি।

 

২০ মার্চ ২০২৩, নীরোগ অ্যাপের উদ্যোক্তারা অসহায় রোগাক্রান্ত শিশু/ব্যক্তি এবং দাতার (ডোনার) মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে একটি প্ল্যাটফর্ম শুরুর পরিকল্পনা করেন। একই বছরের ১৫ এপ্রিল ‘নীরোগ অ্যাপ’ থেকে ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’-এ রূপান্তর করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা করা হয় এবং তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়। নীরোগ অর্গানাইজেশন-এর স্লোগান নির্ধারণ করা হয়: সুস্থতা ও সুখের সেতুবন্ধ।

 

নীরোগ অর্গানাইজেশন একটি স্বেচ্ছাসেবী, বেসরকারি, অরাজনৈতিক ও দাতব্য কল্যাণমূলক সংস্থা। নীরোগ অর্গানাইজেশন-এর যাত্রা রাজধানী ঢাকা শহরে শুরু হলেও সংস্থার প্রধান কার্যালয় নিজপাড়া, বীরগঞ্জ, দিনাজপুরে অবস্থিত। সংস্থাটির কার্য এলাকা নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণ করা হবে।

 

নীরোগ অর্গানাইজেশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো গরীব, অসহায় রোগাক্রান্ত শিশু/ব্যক্তি এবং দাতার (ডোনার) মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরির মাধ্যম হিসেবে কাজ করা। আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছেন (বিশেষত শিশু) যারা নানাবিধ দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। সামর্থ্যবান, যাঁরা ওইসব অসহায় রোগীর পাশে দাঁড়াতে চান, আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে চান, ‘নীরোগ অর্গানাইজেশন’ তাদের দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

 

নীরোগ অর্গানাইজেশনের কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৩ সালে দুজন সাহায্যপ্রার্থীর প্রোফাইল (পরিচয় ও রোগের বিস্তারিত) নীরোগ অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাবলিশ হয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। এতে একজন সাহায্যপ্রার্থী প্রায় ৪ লাখ টাকা সহযোগিতা পান। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে দুজন সাহায্যপ্রার্থীর প্রোফাইল পাবলিশ করা হয়, যা এখনো অনুদান প্রাপ্তির জন্য সক্রিয় রয়েছে।

নীরোগ বন্ধু (ভলান্টিয়ার) হিসেবে যুক্ত হতে আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ করুন।